Cont....... (5)
সুষুম্না ও ব্রহ্মরন্ধ্রঃ---- মস্তিষ্কের পশ্চাৎ ভাগস্থ সুষুম্নাপথে ব্রহ্মরন্ধ্র হতে নিবৃত্তিমূলক শক্তি এবং সম্মুস্থ সুষুম্নাপথে প্রবৃত্তিমূলক শক্তি আঞ্জাচক্রে আসে বা জাগে। এই নিবৃত্তি ও প্রবৃত্তি শক্তির দুটি ধারাকেই আঞ্জাচক্রের দ্বিদল বলা হয়; ইতর যোগীদের ধারণামত ধ্যানাবস্থায় সত্য সত্য দুই পাঁপড়ি বিশিষ্ট কোন পদ্ম ফুল ফোটে না!
সুষুম্না ও ব্রহ্মরন্ধ্রঃ---- মস্তিষ্কের পশ্চাৎ ভাগস্থ সুষুম্নাপথে ব্রহ্মরন্ধ্র হতে নিবৃত্তিমূলক শক্তি এবং সম্মুস্থ সুষুম্নাপথে প্রবৃত্তিমূলক শক্তি আঞ্জাচক্রে আসে বা জাগে। এই নিবৃত্তি ও প্রবৃত্তি শক্তির দুটি ধারাকেই আঞ্জাচক্রের দ্বিদল বলা হয়; ইতর যোগীদের ধারণামত ধ্যানাবস্থায় সত্য সত্য দুই পাঁপড়ি বিশিষ্ট কোন পদ্ম ফুল ফোটে না!
শৈবাগমের ঋষি ঐ আঞ্জাচক্রের মাহাত্ম্য প্রকাশ করতে গিয়ে বলেছেন-
যঃ করোতি সদা ধ্যানম্ আঞ্জাপদ্মস্য গোপিতম্।
পূর্বজন্মকৃং কর্ম বিনশ্যত্যবিরোধতঃ।।
---যিনি সর্বদাই প্রকৃত আঞ্জাচক্র বা দ্বিদলের ধ্যান করেন, তাঁর পূর্বজন্মকৃত সমূহ কর্ম অবাধে বিধ্বস্ত হয়।
স্বয়ং সদাশিব বলেছেন--- দ্বিদল পদ্মে ধ্যানের মহিমা আমিও সম্যক বলতে পারি না। যে করবে সেই জানবে যে এই ধ্যানের ফলে বিচিত্র বিচিত্র ফল দিব্যানুভূতি ও দিব্যাশক্তি আশাতীত ভাবে লাভ করা যায়।
দ্বিদলধ্যানমাহাত্ম্যং কথিতুম্ নৈব শক্যতে।
যঃ করোতি স জানাতি বিচিত্র ফলসম্ভবম্।।
ঐ আঞ্জাচক্রের ঊর্ধ্বে মস্তক মধ্যস্থ ব্রহ্মতালু বা ব্রহ্মরন্ধ্রে সহস্রদল পদ্মের বিকাশ স্থল। সহস্র শব্দের অর্থ এখানে অনন্ত। অনন্ত শক্তির আধার বলে এই কেন্দ্রকে সহস্রদল কমল বলা হয়। বিভিন্ন চক্র, দল, অক্ষর ও দেবতাদিতে যত রকমের শক্তি ও জ্যোতির প্রকাশ আছে, তাদের সমষ্টি-কেন্দ্র এটি।
শূন্যের মধ্যে বা গ্রামোফোন রেকর্ডের মধ্যে যেমন শব্দ বা সুরশক্তি অন্তর্নিহিত থাকে, সেইরকম এই সহস্রদল কমলের মধ্যে ব্রহ্মাণ্ড প্রকাশের মূলীভূত দিব্যতেজ নিহিত রয়েছে। এই কেন্দ্র উজ্জীবিত হলে উদয়কালীন সূর্যের মত শ্বেতবর্ণের জ্যোতিতে দীপ্তিমন্ত হয়ে ওঠে। চিত্র মধ্যস্থ ব্রহ্মতালুতে সেই উদয়কালীন সূর্যবৎ জ্যোতির ছটা দেখানো হয়েছে। সহস্রদল কমলের জাগরণী পর্ব।
বৈঞ্জানিকরা বলেন ঊর্ধ্বাকাশ হতে আলোগতি যখন ছুটে আসে তখন তার আকার ইংরাজী "ভি" অক্ষরের (V) মত। পূর্ব কথিত আদ্যাশক্তির তেজও যখন ভূমণ্ডলে প্রকট হয় তখনও তার আকৃতি দাঁড়ায় ঐ " ভি" এর মত।
কিন্তু বিদৃতিদ্বার দিয়ে ব্রহ্মরন্ধ্র পথে জীবদেহে ক্রিয়ামান হওয়ার সময় তার গতি হয় উল্টা "ভি" অর্থাৎ 'A'। ঐ তেজ যখন ঊর্ধ্বায়িত হয় অর্থাৎ সাধনার দ্বারা জীবাত্মা ঊর্ধ্ব পথে অগ্রসর হলে সেই জীবাত্মা-জ্যোতির রূপ হয় 'V' এর মত। এটি যোগীর উত্তরায়ণের পথে উত্তরণ পর্ব। চিত্র মধ্যস্থ যোগীর ব্রহ্মরন্ধ্রে যে জ্যোতি মণ্ডিত 'V' এবং চারদিকে ছটার মণ্ডল দেখানো হয়েছে, তা উপর্যুক্ত তত্ত্বেরই সূচক।
এখানে স্থূলদেহের মস্তিষ্ক প্রদেশের চিত্র দেখিয়ে তত্ত্বটি পরিস্ফুট করার চেষ্টা করছি বটে কিন্তু সহস্রারাদি দিব্যকেন্দ্র প্রকৃতপক্ষে বিশুদ্ধব্যোম মণ্ডলে বিরাজিত। শিবস ংহিতার ভাষায়,
কিন্তু বিদৃতিদ্বার দিয়ে ব্রহ্মরন্ধ্র পথে জীবদেহে ক্রিয়ামান হওয়ার সময় তার গতি হয় উল্টা "ভি" অর্থাৎ 'A'। ঐ তেজ যখন ঊর্ধ্বায়িত হয় অর্থাৎ সাধনার দ্বারা জীবাত্মা ঊর্ধ্ব পথে অগ্রসর হলে সেই জীবাত্মা-জ্যোতির রূপ হয় 'V' এর মত। এটি যোগীর উত্তরায়ণের পথে উত্তরণ পর্ব। চিত্র মধ্যস্থ যোগীর ব্রহ্মরন্ধ্রে যে জ্যোতি মণ্ডিত 'V' এবং চারদিকে ছটার মণ্ডল দেখানো হয়েছে, তা উপর্যুক্ত তত্ত্বেরই সূচক।
এখানে স্থূলদেহের মস্তিষ্ক প্রদেশের চিত্র দেখিয়ে তত্ত্বটি পরিস্ফুট করার চেষ্টা করছি বটে কিন্তু সহস্রারাদি দিব্যকেন্দ্র প্রকৃতপক্ষে বিশুদ্ধব্যোম মণ্ডলে বিরাজিত। শিবস ংহিতার ভাষায়,
অতঊর্ধ্বং দিব্যরূপং সহস্রারং সরোরুং
ব্রহ্মাণ্ডাখ্যস্য দেহস্য বাহ্যে তিষ্ঠতি মুক্তিদম্।।
--- আঞ্জাপদ্মের ঊর্ধ্বদেশে ঐ দিব্যসহস্রদল কমল, ব্রহ্মাণ্ডাখ্য এই দেহের বহির্দেশে বিদ্যমান। অর্থাৎ এই কেন্দ্রের বিস্তারের মধ্যেই স্থূলদেহ। এই কেন্দ্র পরম নির্বাণের স্থান।
তস্য মধ্যান্তরালে শিবপদমমলং
শাশ্বতং যোগিগমনং,
নিত্যানন্দাভিধানং পরমবোধিপদং
শুদ্ধবোধপ্রকাশং।
কেচিদ্ ব্রহ্মাভিধানং পদমতি সুধিয়ো
বৈষ্ণবং তল্লপন্তি,
কেচিৎ হংসাখ্যমেতং কিমপি সুকৃতিনো
মোক্ষবর্ত্মপ্রকাশং।।
---সারমর্ম হল, যাঁরা শৈব তাঁদের কাছে ঐ স্থানই পরমশিবপদ কৈলাসক্ষেত্র, যোগীদের কাছে চিরায়ত আনন্দের শান্তিবন তূরীয় ব্রহ্মপদ, সুধী বৈষ্ণবদের নিকট বিষ্ণুর পরম অব্যয়পদ, রামভক্তদের কাছে সাকেতভূমি অযোধ্যা, শাক্তদের কাছে মহাশক্তিপীঠ, নাথ ও সিদ্ধদের নিকট ঐটিই হ ংসপদ, আবার কোন কোন সুকৃতিমান্ ব্যক্তি একে মোক্ষপদের দ্বার বলে কীর্তন করেন।
আঞ্জাচক্রের কিঞ্চিৎ ঊর্ধ্বে অথচ সহস্রদল কমলের কিঞ্চিৎ অধোভাগে নিষ্কলঙ্ক সুধাস্রাবী চন্দ্রমণ্ডল আছে। এই চন্দ্রমণ্ডলের অন্ত হতে মধ্যভাগ পর্যন্ত এক আনন্দময় দিব্যস্থানে বিদ্যুদাকার এক ত্রিকোণ যন্ত্র আছে---
ত্রিকোণং তস্যান্তঃ স্ফুরতি চ সততং বিদ্যুদাকাররূপং।
To be Continued...........
No comments:
Post a Comment