Saturday, June 27, 2015


"মহেশ মঙ্গলময় জ্যোতির আধার
ধুন্‌ নাদ বম্‌ ওম্‌ তাঁহার আকার।
মিলিত হলেন শিব যবে শক্তি সাথ
তার ধারা মাতাপিতা দেবতা সাক্ষাৎ।

ভুবনবীণার মূল তারেতে শাশ্বত
যে অনাদি প্রাণবাণী হতেছে ঝঙ্কৃত,
তার উৎস শক্তিপীঠে অর্ধনারীশ্বর
তারই ছায়া পিতামাতা প্রত্যক্ষ ঈশ্বর।"

Saturday, June 6, 2015

"বাণলিঙ্গ নির্বাচনের পদ্ধতি" ---


শিবলিঙ্গপ্রার্থী কোন শিবলিঙ্গ পূজা করার জন্য বাণলিঙ্গ প্রার্থনা করলে তুলাদণ্ডের একদিকে শিবলিঙ্গটি বসিয়ে অন্যদিকে আতপ চাল দিয়ে ওজন করতে হয়। ওজন সমান করে অর্থাৎ শিবলিঙ্গের সম পরিমাণ চাল একটি কৌটায় রেখে মিনিট পাঁচেক ধরে শিবের কাছে প্রার্থনা করতে হয় 'প্রভু! তুমি যদি এই ভক্তের পূজা গ্রহণ করতে চাও, তাহলে চালগুলির পরিমাণ তোমার অনুগ্রহদৃষ্টিতে বেড়ে যাক। নতুবা ওজন কমে যাক।' 


পাঁচ মিনিট পরে তুলাদণ্ডের একদিকে শিব এবং অন্যদিকে সেই কৌটায় রাখা চালগুলি রেখে ৫ বা ২১ বার ওজন করলে প্রতিবারেই চালের ওজন ক্রমশ উত্তরোত্তর বেড়ে যেতে দেখা যায়, তাহলে বুঝতে হবে শিবলিঙ্গটি বাণলিঙ্গ। 


৫ বা ২১ বারের ওজনে যদি শিবলিঙ্গ এবং চালের তুলাসাম্য না ঘটে অর্থাৎ একবার চালের ওজন আরেক বার শিবের ওজন বেড়ে যায় তাহলে বুঝতে হবে সেটি বাণলিঙ্গ। এই নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটলে বুঝতে হবে শিবলিঙ্গটি বাণলিঙ্গ নন। 


সর্বাবস্থায় শিব ও চালের ওজন সমান থাকলে সেটি প্রস্তর নির্মিত কোন সাধারণ শিবলিঙ্গ বলে বুঝতে হবে। তা গ্রহণ করা উচিত নয়। এই শিবলিঙ্গ অর্চনায় ভক্তের কোন ক্ষতি হবে না বটে তবে কোন অভীষ্ট সিদ্ধিও হবে না।


প্রকৃত বাণলিঙ্গ হলে তাঁকে যদি নদীপ্রবাহে ছুঁড়ে ফেলা যায়, তাহলে নদীতে নেমে কিছুক্ষণ জলে হাত  চুবিয়ে খুঁজতে থাকলে সেই বাণলিঙ্গ পুণরায় হাতে এসে ঠেকবেন অর্থাৎ হারানিধি আবার ফিরে পাওয়া যাবে। এইরকম মহাজাগ্রত বাণলিঙ্গের পূজায় ভক্তের সুখ-সমৃদ্ধি ক্রমবর্ধমান হয়ে থাকে। 


শিবলিঙ্গ ও চালের প্রথম বারের ওজনে চাল যেটুকু বাড়ল, পরপর ওজন করলেও যদি চালের পরিমাণ ঐ একই অবস্থায় থাকে, ক্রমে ক্রমে চাল না বাড়তে থাকে, তাহলে শিবলিঙ্গটি নর্মদেশ্বর। বাণলিঙ্গ নয়। প্রতিটি নর্মদেশ্বরই পূজার্হ।


শিবলিঙ্গ ও চালের ওজনে যদি শিবলিঙ্গের তুলনায় চালের ওজন বেড়ে যায়, তা গৃহী বা সন্ন্যাসীর পূজ্য বলে অবধারিত।


যদি চালের চেয়ে শিবের ওজন বেশী হয়, তা গৃহী বা সন্ন্যাসী কারও পক্ষে মঙ্গলদায়ক নয়।



www.facebook.com/pages/tapobhuminarmada/454528151310191


www.twitter.com/tapobhumi30


www.anandatapobhuminarmada.blogspot.com 




Wednesday, June 3, 2015

"বাণলিঙ্গ" ---


বলিরাজার পুত্র বাণাসুরের রাজধানী ছিল নর্মদাতটে। প্রবল পরাক্রান্ত বাণ শুধু অসাধারণ শৌর্যবীর্যের অধিকারী ছিলেন এটাই তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ পরিচয় নয়, তিনি ছিলেন অসাধারণ শিবভক্ত। মহারাজ বাণের উগ্র শিব-তপস্যায় ভক্তিবশ ভগবান মহাদেব এতই পরিতুষ্ট হয়েছিলেন যে তিনি নিজেই "বাণ" নাম গ্রহণ করে ভক্তের অতুলনীয় ভক্তি ও তপস্যাকে চিরস্মরণীয় করে রেখেছেন। 

তাই "বাণ" শব্দের অর্থ হল শিব। তিনি (মহাদেব) বাণলিঙ্গ রূপে (ধাবড়ী কুণ্ডে) স্বতঃই  নর্মদার জলে উদ্ভূত হয়ে নিয়ত নর্মদাতে বিরাজমান থাকেন। 

যাঞ্জবল্ক্য সংহিতায় আছে ---

"প্রশস্তং নর্মদাং লিঙ্গং পক্কজম্বুফলাকৃতি।
মধুবর্ণং তথা শুক্লং নীলং মরকতপ্রভম্‌।।
হংসডিম্বাকৃতি পুনঃ স্থাপনায়ং প্রশস্যতে।
স্বয়ং সংশ্রবতে লিঙ্গং গিরিতো নর্মদাজলে।।
পুরা বাণাসুরেণাহং প্রার্থিতো নর্মদাতটে।
অবিবশং গিরৌ তত্র লিঙ্গরূপী মহেশ্বরঃ।।
বাণলিঙ্গমপি খ্যাতমতোহর্পাজ্জগতীতলে।।
অন্যেষাং কোটি লিঙ্গাণাং পূজনে যতফলং লভেৎ।
তৎফলং লভতে মর্ত্ত্যো বাণলিঙ্গৈকপূজনাৎ।।" 

শত সহস্র শিবলিঙ্গের মধ্যে যেগুলির আকৃতি হবে পাকা জাম বা হংস ডিম্বের মত, বর্ণ হবে পাকা জামের মত কিংবা মধুবর্ণ, শ্বেত, নীল এবং মরকতের মত দ্যুতি সম্পন্ন --- সেগুলি শিবের বাণলিঙ্গ রূপ। অন্যান্য কোটি কোটি লিঙ্গ পূজার যা ফল, একটি বাণলিঙ্গ পূজা করলে তার সমস্ত সুফল পাওয়া যায়।  

তামা, স্ফটিক, স্বর্ণ, প্রস্তর বা রৌপ্য দিয়ে নির্মিত যোনিপীঠ যেমন বাণলিঙ্গের আধার, বেদীও তেমনি প্রশস্ত আধার। 

প্রতিদিন যে নর্মদা-জাত বাণলিঙ্গের অর্চনা করে --- ঐহিক সম্পদ, সুদুর্লভ মুক্তিও তার করতালগত হয়।