Wednesday, June 3, 2015

"বাণলিঙ্গ" ---


বলিরাজার পুত্র বাণাসুরের রাজধানী ছিল নর্মদাতটে। প্রবল পরাক্রান্ত বাণ শুধু অসাধারণ শৌর্যবীর্যের অধিকারী ছিলেন এটাই তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ পরিচয় নয়, তিনি ছিলেন অসাধারণ শিবভক্ত। মহারাজ বাণের উগ্র শিব-তপস্যায় ভক্তিবশ ভগবান মহাদেব এতই পরিতুষ্ট হয়েছিলেন যে তিনি নিজেই "বাণ" নাম গ্রহণ করে ভক্তের অতুলনীয় ভক্তি ও তপস্যাকে চিরস্মরণীয় করে রেখেছেন। 

তাই "বাণ" শব্দের অর্থ হল শিব। তিনি (মহাদেব) বাণলিঙ্গ রূপে (ধাবড়ী কুণ্ডে) স্বতঃই  নর্মদার জলে উদ্ভূত হয়ে নিয়ত নর্মদাতে বিরাজমান থাকেন। 

যাঞ্জবল্ক্য সংহিতায় আছে ---

"প্রশস্তং নর্মদাং লিঙ্গং পক্কজম্বুফলাকৃতি।
মধুবর্ণং তথা শুক্লং নীলং মরকতপ্রভম্‌।।
হংসডিম্বাকৃতি পুনঃ স্থাপনায়ং প্রশস্যতে।
স্বয়ং সংশ্রবতে লিঙ্গং গিরিতো নর্মদাজলে।।
পুরা বাণাসুরেণাহং প্রার্থিতো নর্মদাতটে।
অবিবশং গিরৌ তত্র লিঙ্গরূপী মহেশ্বরঃ।।
বাণলিঙ্গমপি খ্যাতমতোহর্পাজ্জগতীতলে।।
অন্যেষাং কোটি লিঙ্গাণাং পূজনে যতফলং লভেৎ।
তৎফলং লভতে মর্ত্ত্যো বাণলিঙ্গৈকপূজনাৎ।।" 

শত সহস্র শিবলিঙ্গের মধ্যে যেগুলির আকৃতি হবে পাকা জাম বা হংস ডিম্বের মত, বর্ণ হবে পাকা জামের মত কিংবা মধুবর্ণ, শ্বেত, নীল এবং মরকতের মত দ্যুতি সম্পন্ন --- সেগুলি শিবের বাণলিঙ্গ রূপ। অন্যান্য কোটি কোটি লিঙ্গ পূজার যা ফল, একটি বাণলিঙ্গ পূজা করলে তার সমস্ত সুফল পাওয়া যায়।  

তামা, স্ফটিক, স্বর্ণ, প্রস্তর বা রৌপ্য দিয়ে নির্মিত যোনিপীঠ যেমন বাণলিঙ্গের আধার, বেদীও তেমনি প্রশস্ত আধার। 

প্রতিদিন যে নর্মদা-জাত বাণলিঙ্গের অর্চনা করে --- ঐহিক সম্পদ, সুদুর্লভ মুক্তিও তার করতালগত হয়।





No comments:

Post a Comment