Tuesday, December 24, 2013



কোথা  আছে  রে, দীন  দরদী  সাঁই!
পিতৃদেবের  ধেয়ান  ধরো
খবর  পাবে  ভাই।
চক্ষু  আঁধার  ভুলের  ধোঁকায়
কেশের  আড়ে  পাহাড়  লুকায়
কি  রঙ্গ  সাঁই  দেখছে  সদাই,
বসে  নিগম  ঠাঁই।
অহরহ  দেখছ  তারে
চেনতে  নারো  ভুলের  ঘোরে
পিতার  মাঝে  পরমপিতা
চিনতে  জানা  চাই।।



যা  পাবে  মায়ের  কাছে, তত স্নেহ  কোথা  আছে?

আর  কারও  প্রেমে  তুমি  ভুলিও  না ভাই,
সে  সব  প্রেমের  সরা, সতর্কে  ওজন  করা
    মা'র  প্রেমে  দরদাম  কষাকষি  নাই।



Wednesday, December 11, 2013



জটাটবী-গলজ্জল-প্রবাহ-প্লাবিত-স্থলে, 
গলেহবলম্ব্য লম্বিতাং ভূজঙ্গ-তুঙ্গ-মালিকাম্‌।
ডমড্‌-ডমড্‌-ডমড্‌ ডমন্নিনাদ-বড ডমর্বয়ং, 
চকার চণ্ড তাণ্ডবং তনোতু নঃ শিবঃ শিবম্‌।।



হে প্রভু শিবসুন্দর! তোমার জটার অরণ্য হতে গঙ্গার ধারা গলগল করে বেয়ে এসে তোমার গলদেশকে প্লাবিত করছে, সেই গলদেশ আবার সর্পমালায় বিভূষিত, তুমিই একবার ডমরু বাজিয়ে ডমড্‌ ডমড্‌ ডমড্‌ ধ্বনি তুলে তাণ্ডব-নৃত্যে ত্রিভুবনকে কম্পমান করেছিলে, তুমি আমাদের মঙ্গল বিধান কর।



জটাকটাহসম্ভ্রমভ্রমন্নিলিম্পনির্ঝরী --- 
বিলোলবীচিবল্লরীবিরাজমানমূর্দ্ধনি।
ধগদ্‌  ধগদ্‌  ধগদজ্জ্বল-ললাটপট্টপাবকে
কিশোরচন্দ্রশেখরে রতিঃ প্রতিক্ষণং মম।।



জটারূপ কটাহ হতে বেগে বহমান গঙ্গার চঞ্চল তরঙ্গমালায় যাঁর মস্তক শোভিত এবং যাঁর ললাটে ধগদ্‌ ধগদ্‌ শব্দে অগ্নি দেদীপ্যমান, সেই তুমি কিশোর চন্দ্রশেখর! তোমার চরণ কমলে আমাদের প্রতিক্ষণ রতি হোক।


https://www.facebook.com/pages/tapobhuminarmada/454528151310191

Wednesday, December 4, 2013


.......... মহর্ষি রৈক্ক রাজা জানশ্রুতিকে উপদেশ দিতে আরম্ভ করলেন --বায়ুর্বাব সম্বর্গো --- বায়ুই সম্বর্গ। অগ্নি যখন নির্বাপিত হন, তখন বায়ুতেই লীন হন। সূর্য যখন অস্তগমন করেন তখন বায়ুতেই লীন হন, চন্দ্র যখন অস্তমিত হন, তখন বায়ুতেই লীন হন। বায়ুই হচ্ছে মূল সঞ্চালন-শক্তি।প্রলয়কালে তেজোরূপী সূর্যাদি স্বীয় কারণবায়ুতে লীন হন বলে বায়ুকে সম্বর্গ বলে।যখন জল বিশুষ্ক হন, তখন বায়ুতে লীন হন, কারণ বায়ুই বাহ্য-জগতের সব কিছুকে আত্মসাৎ করেন --- বায়ু র্হি এব এতাম্‌ সর্বান্‌ সংবৃঙ্‌ক্তে।


ঋষি এইভাবে দেবতা গণের মধ্যে সম্বর্গ-দর্শনের রহস্য ব্যাখ্যা করে অনন্তর শরীর মধ্যে সম্বর্গ-দর্শনের তত্ত্ব বলতে লাগলেন --- প্রাণই সম্বর্গ। জীব যখন নিদ্রা যায়, তখন বাগিন্দ্রিয় প্রাণে লীন হয়; চক্ষু প্রাণে লীন হয়, শ্রোত্র প্রাণে লীন হয়, মন প্রাণে লীন হয়, কারণ প্রাণই এই সমুদয়কে আত্মসাৎ করে।


এই দুটি তত্ত্বই অর্থাৎ দেবতাদের মধ্যে বায়ু এবং ইন্দ্রিয়গণের মধ্যে প্রাণ --- উভয়েই সম্বর্গগুণশালী --- তৌ বা এতৌ দ্বৌ সম্বর্গৌ বায়ুরেব দেবেষু প্রাণঃ প্রাণেষু।


রাজা জানশ্রুতি রৈক্কমুনির কাছে এই সম্বর্গ বিদ্যা লাভ করে কৃতকৃত্য হলেন। তিনি আত্মঞ্জান লাভ করলেন।



সম্বর্গ শব্দের অর্থ হল ---  সম্যক বর্গ অর্থাৎ সজাতীয় বস্তুকে সম্যকরূপে একশ্রেণীভুক্ত-করণ অর্থাৎ একীকরণ। জীবাত্মা ও পরমাত্মা সজাতীয় বস্তু, যেটুকু ভেদ আছে তা শুধু সজাতীয় ভেদ, একই গাছের বড়পাতা ও ছোটপাতার মধ্যে যে পার্থক্য সেই পার্থক্যকে দর্শনশাস্ত্রের পরিভাষায় সজাতীয় ভেদ বলে। পরমাত্মা ও জীবাত্মা --- একই চিন্ময় বস্তু,পরমাত্মা সর্বব্যাপক, কিন্তু জীবভাবের আবরণ পড়ায় জীবাত্মা দেহের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ থাকে। জীব ভাব খসে পড়লে আত্মা পরমাত্মার একীকরণ ঘটে।

সংস্কৃতে সমপূর্বক বৃজ্‌ ধাতুর উত্তর ঘঞ প্রত্যয় করে সম্বর্গ পদ সিদ্ধ হয়।বৃজ ধাতুর অর্থ বর্জন বা ত্যাগ করা। যে অলৌকিক বিদ্যার সাহায্যে জীবাত্মা স্থূলাকাশ ত্যাগ করে সূক্ষ্মাকাশে, সূক্ষ্মাকাশ বর্জন করে কারণজগতে, ক্রমে কারণজগত ত্যাগ করে মহাকারণে লীন হয়, আত্মস্বরূপ প্রতিষ্ঠিত হয়, সেই সজাতীয় ভেদ রহিত পরমাত্মার সহিত একীকরণ পদ্ধতিই হল এই সম্বর্গবিদ্যা --- ঔপনিষদিক যুগের ঋষিদের অতি প্রিয় গুহ্যতত্ত্ব।



https://www.facebook.com/pages/tapobhuminarmada/454528151310191