তিনি দেখছেন ! সতত পরত দেখছেন আমাদেরকে। তাঁর নির্ণিমেষ দৃষ্টিতে আমাদের প্রতিটি কর্ম, ভাব ভাবনা এষণা সবই ফুটে রয়েছে। তিনি বিশ্বতোচক্ষুঃ, তাঁর বিশ্বব্যাপী সেই পরাবর দৃষ্টির বাইরে যাবার বা কোন কিছু করার সাধ্য জীবের নাই। তিনি সবই সবসময় দেখছেন। তিনি দেখছেন আমরা কর্মফল ভোগ করছি, তাঁরই অঙ্গীভূত ও অংশগত হয়ে আমরা ঘোর কর্মে আবদ্ধ হচ্ছি; তিনি কেবল লক্ষ্য করছেন। আমরা জীবরা বুঝতে পারছি না---- নিজেদের অঞ্জাতসারে---- মোহ মরীচিকায় বিভ্রান্ত হয়ে, অপকর্মের পর অপকর্ম করে চলেছি। ভ্রমেও একবার মনে করছি না যে, একজন উপর হতে আমাদের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছেন।
কিন্তু বারেকের জন্যও হ্যয়, তাঁর প্রতি যদি আমাদের দৃষ্টি পড়ত! যদি জীবের একবারও দৃষ্টি পড়ত! তাঁর দিকে, যদি একটিবার বুঝতে পারত, অনুভব করতে পারত যে আর একজনের দৃষ্টি তার উপর ন্যস্ত আছে, তাহলে কি কোন অপকর্মে কেউ প্রবৃত্ত হতে পারত? নিজের ঘরে স্বামী স্ত্রী উভয়ে মিলিত হতে গিয়ে যদি দেখে পাশের বাড়ী হতে জানালা দিয়ে কোন বয়স্ক পুরুষ মহিলা এমনকি একটি ফুটফুটে কচি শিশুও তাদের দিকে তাকিয়ে আছে, তাহলে লজ্জা ও সঙ্কোচ বসে নিজের ঘরের জানালাটা বন্ধ করে দিয়ে, আলো জ্বললে অন্ততঃ আলোটা নিভিয়ে দেয়। সেইরকম জীবের যদি বোধ জাগে যে, সব কাজেরই সাক্ষী রয়েছেন একজন তাহলে কারও পক্ষে কোন অসৎ ভাবনা বা অসৎ কাজ করা কোন মতেই সম্ভব হত না।
দ্রষ্টার প্রতি দৃষ্টি পড়লে তিনি আছেন, সর্বত্র আছেন। তাঁর জ্যোতিষ্মান দৃষ্টি অহরহ জাগ্রত আছে। এই বোধ দৃঢ় হলেই কর্মেরর বিপাক কেটে যায়। সেই দৃষ্টিই দ্রষ্টার নিকটে দোর্ষিতকে নিয়ে যায়। সেই দৃষ্টির প্রভাবেই জীব মুক্তি লাভ করে। ব্যষ্টি মিলে যায় সমষ্টিতে। জীব চৈতন্যের নির্যান ঘটে অনন্ত চৈতন্যে।