Wednesday, April 24, 2013

*** নর্মদা পরিক্রমা কি এবং কেনঃ---


ঋষি  সেবিত  দেশ  আমাদের  এই  ভারতবর্ষ। এখানকার  ব্রহ্মর্ষি  মহর্ষিদের  ধ্যানদৃষ্টিতেই  পৃথিবীতে  সর্বপ্রথম ঘোষিত  হয়েছিল  একটি  পরম  তত্ত্ব ------ সর্ব  ঋল্বিদং  ব্রহ্ম ---- অর্থাৎ  যৎ  যৎ  বস্তু  চোখে  পড়ে  তৎ তৎ  বস্তু  ব্রহ্মের  প্রকাশ  বিকাশ। কৃমি  কীট  হতে  স্থাবর  জঙ্গম  যাবতীত  পদার্থ, পশুপাখী  কীটপতঙ্গ  এমনকি  মানুষ, তিনি  পাপিষ্ঠ  বা  পুণ্যাত্মা  যাই  হোক  না  কেন  সকলের  মধ্যে  একই  চিৎশক্তির  খেলা  চলছে। ধ্যানী  পুরুষের  ধ্যানদৃষ্টিতে  নদীর জলপ্রবাহের  মধ্যেও  একটা  অতীন্দ্রিয়  সত্ত্বা  উদ্‌ঘাটিত  হয় এতে  আশ্চর্য  হবার  কিছু  নেই।


নর্মদা, তিনি  রুদ্রকন্যা। স্বয়ম্ভু  মহাদেবের  তেজ  হতে  তাঁর  জন্ম। গঙ্গার  অপার  মহিমার  কথা  স্মরণে  রেখেও  মহর্ষি  ভৃগু কর্দম  কপিল  দুর্বাসা  অণীমাণ্ডব্য  প্রভৃতি  বৈদিক ঋষিরা  বলেছিলেন---



নর্মদা  সরিতাং  শ্রেষ্ঠা  রুদ্রতেজাং  বিনিঃসৃতা।
তারয়েৎ  সর্বভূতানি  স্থাবরানি  চরানি  চ।।

নর্মদা  সমস্ত  নদীকুলের  মধ্যে  শ্রেষ্ঠা; রুদ্রের  তেজ  হতে  সমুৎপন্না; স্থাবর  জঙ্গম  সমস্ত  কিছুকেই  তিনি  ত্রাণ  করেন। সর্বসিদ্ধিমেবাপ্নোতি  তস্যা  তটপরিক্রমাৎ। শুদ্ধচিত্তে  তাঁর  তট  পরিক্রমা  করলে  সর্বসিদ্ধি  করায়ত্ত  হয়।

মহাভারতের  বনপর্বে  পুলস্ত্য  মুনি  যুধিষ্ঠিরকে  আশীর্বাদ  করে  বলেন, তুমি  অন্যান্য  তীর্থেতো  যাবেই, বিশেষ  করে  ত্রিলোক  প্রসিদ্ধ  নর্মদাকে  অতি  অবশ্যই  দর্শন  করে  আসবে। নর্মদাতে পিতৃপুরুষ  এবং  দেবতাদের  পূজা  তর্পন  করলে  অগ্নিষ্টোম যঞ্জানুষ্ঠানের  ফল  লাভ  হয়।

নর্মদা  পরিক্রমা  করতে  করতে  জীব-জীবন  হতে  শিব-জীবনে  উত্তরণ  ঘটে, শুধু  বারদীর  লোকনাথ  ব্রহ্মচারী  বা  দিগম্বরজী  নয়, যুগ  যুগ  ধরে  সহস্র  সহস্র  পরিক্রমাকারীর  জীবনে  নর্মদামায়ীর আশীর্বাদ  এইভাবেই  নেমে  এসেছে।

তাই  মহর্ষি  মার্কণ্ডেয়  ভৃগু  কপিল  দুর্বাসা  থেকে  আরম্ভ  করে এযুগের  কমলভারতীজী, গৌরীশঙ্করজী  প্রভৃতির  দিব্যজীবনের  প্রত্যক্ষ  ঘটনা  স্মরণে  রেখেই  শাস্ত্রকাররা  বলেছেন--- নর্মদার নিত্য  জলপান, নিত্যস্নান  এবং  তাঁর  তটে তটে  যেসব  শিবলিঙ্গ তার  অর্চনা  করতে  করতেই  জীবের  দুর্গতি  নাশ  হয়। মর্ত্তজীবনেই অমর্ত্তজীবনের  সন্ধান  মিলে।

নর্মদা --- মধুনিস্যন্দিনী  সংস্কৃত  ভাষায়  ঋষিদের  অত্যন্ত  তাৎপর্যময়  এই  শব্দটি  মূর্তিমতী  "গায়েত্রী"র  মতই  ত্র্যক্ষরা। নর্মন্‌  ধাতু  হতে  শব্দটি  নিষ্পন্ন, নর্মন্‌  দদাতি  ইতি নর্মদা। নর্মন্‌  হচ্ছে  নৃ  ধাতুর  উত্তর  মন্‌  ও কর্তৃবাচ্যে। নর্ম  মানে  কি? নর্ম  মানে  হচ্ছে  ক্রিয়া, নর্ম  মানে  হচ্ছে  খেলা, প্রিয়ত্ব বা বিহার।

নর্ম ---- দা + ড = নর্মদা। নর্মন্‌  দদাতি  অর্থাৎ  আনন্দ --- বিলাস  যিনি  দান  করেন।

ব্রহ্মের  যে  আনন্দ---বিলাস, জগৎ জুড়ে  সে  আনন্দের  লীলা  চলছে, উপনিষদে  আছে --- আনন্দাদ্ধেব  ঋল্বিমানি  ভূতানি  জায়ন্তে, আনন্দেন  জাতানি  জীবন্তি --- আনন্দ  থেকে  জাত, আনন্দের  বুকে  সবাই  আছে। অন্তে  এই  আনন্দেই  সব  লয়  পাবে --- আনন্দব্রহ্মের  সেই  অলৌকিক  আনন্দ---বিলাস  দেখবার  বুঝবার এবং অনুভব  করার  ক্ষমতা  যিনি  দান  করেন  তিনিই  নর্মদা।

মার্কণ্ডেয়জীকে  মা  নর্মদা  বলেছিলেন ---  প্রতি  কল্পান্তকালে  প্রলয়  পয়োধি  নীরে  সেই  অন্তহীন  একার্ণবে  একাকী  যখন  সন্তরণ  করতে  থাকবে  তখন  আমিই  তোমাকে  রক্ষা  করব।


নর্মদা  তীর  হল  তপস্যা  ক্ষেত্র। এখানে  অঙ্গিরা, আঙ্গিরস, সনক, দীর্ঘতমা, জৈগীষব্য, অণীমাণ্ডব্য  প্রভৃতি  বৈদিক  ঋষিরা  ছাড়াও  এসেছেন  এখানে  আদি  বিদ্বান  কপিল, মহামুনি  মার্কণ্ডেয়, মৎস্যেন্দ্রনাথ, গোরক্ষনাথ, পতঞ্জলি, গোবিন্দপাদ  এমনকি  ভারতীয়  দর্শন  ও  সংস্কৃতি  যিনি  কোহিনুরস্বরূপ  সেই  আদি শংকরাচার্যও  এসেছিলেন  এখানে  তপস্যা  করতে। কত যে  প্রবর্ত্তক  ব্রহ্মচারী, মুনি, ঋষি, ব্রহ্মবিদ্‌, ব্রহ্মবিদ্‌বর, ব্রহ্মবিদ্‌বরীয়ান  ব্রহ্মবিদ্‌বরিষ্ঠ  নর্মদায়  এসে  তপস্যা  করেছেন  কোন  ইয়ত্তা  নেই।

পরিক্রমার  প্রধান  নিয়মঃ---

1. নিরন্তর  রেবা  মন্ত্র  জপ।

2. নর্মদা  জলধারাকে  সর্বদা  চোখে  চোখে  রেখে  পরিক্রমা।

3. কোনমতেই  নর্মদার  জল  লঙ্ঘন  বা  অতিক্রমা  করা  যাবে  না। অতিক্রম  করা  হলেই  পরিক্রমা  খণ্ডিত  হবে।

4. পরিক্রমাকালে  মন্দির  চোখে  পড়লে, নর্মদার  জলে  শিবলিঙ্গের  অর্চনা।

5. পদব্রজেই  পরিক্রমা  করতে  হয়, পায়ে  জুতা, যানবাহন, কুলিমজুর  নিষিদ্ধ, নিজের  আবশ্যকীয়  দ্রব্য  নিজেকেই  বহন  করতে  হবে।

6. বড়  জোর  একদিনের  খোরাক  ছাড়া  বেশী  খাদ্যবস্তু  ঝুলিতে  রাখা  যাবে  না।

7. সত্য, ব্রহ্মচর্য  ও  সদাচার  পালন। সর্বাবস্থায়  নর্মদা  মায়ীর  উপর  নির্ভরতা।

8. বেশী  জলে  নামা  নিষিদ্ধ।

নর্মদার  শরণ  নিলেই  মা  নর্মদাই  পরিক্রমাকারীর  যোগ ও ক্ষেম (অপ্রাপ্য  বস্তুর  প্রাপ্তি  ও  প্রাপ্তি  বস্তুর  রক্ষা)  বহন  করে  থাকেন।

নর্মদা  পরিক্রমাকালে  তিনটি  বিষমস্থল  অতিক্রম  করতে  হয়।

প্রথমতঃ মুণ্ডমহারণ্যের মত  ঘন, প্রস্তর ও কণ্টকাকীর্ণ  বনভূমি  যেখানে পাখীও  স্বচ্ছন্দে  ডানা  মেলে  উড়তে  পারে  না। পূর্বে  সিংহ  ছিল, এখন  হিংস্র  ব্যাঘ্র, ভল্লুক, হায়েনা, চিতা, বিষধর  সর্পে  পরিপূর্ণ। এই  বন  ৮০ ক্রোশ  অর্থাৎ  ১৬০  মাইল  লম্বা, ১০ মাইল চওড়া।

দ্বিতীয়তঃ  ওঙ্কারেশ্বর  পর্যন্ত  সমতল  মালভূমি ও জঙ্গলসহ  প্রায়  ৫০০ মাইল  লম্বা।

তৃতীয়তঃ  ভয়ঙ্কর  শূলপাণির  ঝাড়ি। যা  ১০০ মাইল  লম্বা,  অতি দূর্গম  কষ্টকর  পথ। শূলপাণির  ঝাড়ির  পাথর  সূঁচলো।


এই  তিনটি  জঙ্গলেই  পরিক্রমাকারীর  পক্ষে  বিষম  পরীক্ষার  স্থল। এই  তিনটি  স্থানেই  কাঁটা  ও  পাথরের  জন্য  পথ  চলা  অতি  দুষ্কর। কোন  কোন  স্থানের  বিশেষতঃ  শূলপাণির  ঝাড়ির  পাথর  ঠিক  যেন  ছুঁচ  বা  ছুরির  মত  ধারালো, তার  উপর  দিয়ে  হেঁটে যাওয়া  অত্যন্ত  কষ্টকর। হাঁটবার  সময়  পথের  কষ্টে  চোখে  জল  আসে। অনেক  সময়  পায়ে  কাপড় ও চট  জড়িয়ে  হাঁটতে  হয়।


নর্মদার  আর  একটি  বিশেষত্ব  হল  নর্মদা  মাতা  পরিক্রমাকারীদের  কারও কোন  নিয়ম  বরাবর  রাখেন  না, নিয়ম  ভেঙে  দেন। কাউকে  একত্র  বা  দলবদ্ধভাবে  থাকতে  দেন  না। অন্ততঃ এক দিনের  জন্য  হলেও  প্রত্যেককে  পৃথক  করে দেন। কখনও  কখনও  প্রায়ই  ঘোর  জঙ্গলে  একাকীই  রাত্রি  যাপন  করতে  হয়। তখন  নর্মদা  মাতাই  তাঁর  ভক্তকে  রক্ষা  করেন।  কখনও  কোন  পরিক্রমাকারী  হিংস্র  জন্তু  বা  সাপের  দংশনে  মারা  গেছেন  এরকম  শোনা  যায়  নি।


পরিক্রমাকালে  নর্মদাকে  অনবরত  চোখে  চোখে  রেখে  পরিক্রমা  করতে  হয়  ও  নিরন্তর  রেবা  মন্ত্র  জপ  করতে  হয়।


মহাকণ্যকা  শক্তি   নর্মদার  স্থূলরূপ  হল  এই  নর্মদার  জলপ্রবাহ। নর্মদার  জলের  দিকে  তাকালেই  বিশ্বের  আদিকারণভূতা  মহাশক্তি  শিবপুত্রী  নর্মদাকে  স্মরণ  মনন  হয়ে  যায়। তারমধ্যেই  সমস্ত  দেবশক্তি  ও  দিব্যশক্তির  প্রকাশ  আছে। স্বয়ং  মহেশ্বরের  বরে  তাঁর  তেজোসম্ভূতা  রেবা  শৈবতেজের  মূর্ত  প্রতিমা। মহেশ্বরের  শ্রীমুখনিঃসৃত  বিধান  এই  যে, নর্মদা  পরিক্রমাকালে  রেবামন্ত্র  জপ  করতে  হয়। নর্মদাকে  চোখে  চোখে  রেখে  স্বীয়  ইষ্টমন্ত্র  জপ  করলেও  নর্মদা  সদৈব  তুষ্ট  থাকেন। শিব  বাক্যকে  মর্যাদা  দেবার  জন্য  রেবারন্ত্র  জপ  করাই  কর্তব্য।


রেবামন্ত্র  মানে  রেবার  মন্ত্র। সেটি  "রেবা  রেবা"  শব্দ  মাত্র  নয়। "রেবা" শব্দ  হতে  পৃথক  কিছু।


রেবামায়ীর  বীজ  ষড়ক্ষর। "ওঁ হ্রাঁ হ্রোং হ্রৃং হ্রৈং হ্রৌং হ্রঃ"। 

এই  মন্ত্রকে  প্রণব  দিয়ে  পুটিত  করলে  সপ্তাক্ষর  হবে, তখন  তা শিবের  সপ্তাক্ষর  মহাবীজের  সমতুল্য। এই  সপ্তাক্ষরের  শেষে "নর্মদায়ৈ  নমঃ" যোগ  করলে  সেই  ত্রয়োদশাক্ষর  বীজের  দ্বারা ব্রহ্মা বিষ্ণু মহেশ্বরাদি  সমূহ  দেবদেবীর  পূজা  ও  স্মরণ  মনন  পূর্ণাঙ্গ হয়ে  থাকে।

নর্মদা  পরিক্রমার  ফল  মেলে  হাতে  হাতে, তা  সে  রুণ্ডা  পরিক্রমা হোক  বা  জলে-হরি  পরিক্রমা  হোক। নর্মদা  পরিক্রমা  হল  একটি সম্পূর্ণ  যোগ  প্রক্রিয়া। পিতৃ-মাতৃ বীজ  বুকে  নিয়ে   যিনি  সাচ্চা  মনে মা  নর্মদাকে  স্মরণে  রেখে  পরিক্রমা  সম্পূর্ণ  করেন, তিনিই  সাচ্চা যোগী। এরজন্য  কোন  ক্ষণ  অবলম্বন  করে  সকাল, বিকাল, সন্ধ্যা বিকৃত  অঙ্গভঙ্গী  বা  নাক কান  টেপাটেপী্র প্রয়োজন  হয় না। মননশীল  সাধক  স্বদেহেই  জ্যোতিঃস্বরূপ  বিশ্বসাক্ষী  পরমাত্মাকে দর্শন  করেন।


https://www.facebook.com/pages/tapobhuminarmada/454528151310191



Monday, April 15, 2013

ভব  ভয়  ভঞ্জন                 পুরুষ  নিরঞ্জন
রতিপতি   গঞ্জনকারী,
যতি--জন--রঞ্জন              মন--মদ--খণ্ডন
জয়  ভব--বন্ধন--হারী।।
জয়  জন--পালক                সুর  দলনায়ক
জয়  জয়  বিশ্ববিধাতা,
চিরশুভ  সাধক                 মতি  মলপাবক
জয়  চিত  সংশয়ত্রাতা।।
সুর  নর  বন্দন                   বিজয়--বিবর্দ্ধন
চিতমলনন্দনকারী,
রিপুচয়মন্থন                   জয়  ভবতারণ,
স্থল--জল--ভূধর--ধারী।।
শমদমমণ্ডন                    অভয়--নিকেতন
জয়   জয়  মঙ্গলদাতা
জয়  সুখ  সাগর                    নটঘর  নাগর
জয়  শরণাগত  পাতা
ভ্রমতমভাস্কর                     জয়  পরমেশ্বর
সুখকর  সুন্দরভাষী,
অচল  সনাতন                  জয়  ভবপাবন
জয়  বিজয়ী  অবিনাশী।।
ভকত   বিমোহন                        বরতনুধরণ
উদগীথ  কীর্ত্তন  ভোলা
গদগদ   ভাষণ                     চিতমনতোষণ
ঢলঢল   নর্ত্তনলীলা।।
মতিগতিবর্জ্জন               কলিমলমর্দন
বিষয়--বিরাগ  প্রসারী,
জয়--চিত  চেতক                       ভব  জল  ভেলক
জয়  নর--মানস--চারী।।
জয়   পুরুষোত্তম                    অনুপম  সংযম
জয়   জয়  অন্তরযামী,
খরতর  সাধন                        নর  দুঃখবারণ
জয়  গুরুদেবনমামি।।




(শুভ  নববর্ষ  ১৪২০)

Friday, April 5, 2013


আত্মা  তুমি, শক্তি  তব  মতি-বুদ্ধি  মোর,
আঞ্জাবহ  তব  বায়ু ------ মোর  পঞ্চপ্রাণ ------
এ  শরীর  তোমারি  ত  প্রিয়  বাসস্থান।
উপভোগ  তরে  মোর  যে  ভোগ  রচনা
তোমারি  ত  সে  সকল  পূজার  বিধান,
নিদ্রা  সে  তো  সমাধিতে  সুখে  অবস্থান।
ভোজন  আমার  আহূতি  প্রদান, শয়ন  আমার  সাষ্টাঙ্গ  প্রণাম।
ভ্রমণ  আমার  প্রদক্ষিণ  তাঁর  প্রতি  কথা  মোর  মন্ত্র,
যেভাবেই  বসি  সেই  ত  আসন, প্রতি  অঙ্গভঙ্গী  মুদ্রা  বিরচন
যে  চিন্তাই  করি  তাঁরই  ধ্যান  করি  এ  জীবন  তাঁর  যন্ত্র।।