Tuesday, May 27, 2014


পিতঃ! অনন্ত আকাশ জুড়ি তোমার বিশাল আঁখি,
জগতের প্রতি দৃশ্যে ও দুটি নয়ন দেখি;
নয়নে নয়ন পড়ে যখন যেদিকে চাই
স্নেহময় আঁখি দুটি সতত দেখিতে পাই।
এ দৃশ্য জগৎ ছেড়ে অন্তরে খুঁজিলে দেখি
প্রেমভরে চেয়ে আছে স্নেহমাখা দুটি আঁখি।
গোপনেই চেয়ে থাক গোপনে বাসগো ভালো
মন্ত্রমূর্তি প্রকাশিয়া করিলে হৃদয় আলো।।
নিজেকে দেবতারূপে যে ঞ্জান মুকুরে
স্বাধ্যায় মনন বলে কিংবা মন্ত্রবলে
মরে বেঁচে উঠি,
আকাশ-কুসুমে গাঁথি জয়মাল্য, অবারিত দূরে
মাধুর্যের রসমূর্তি তুমি পিতঃ। তোমা পানে

Monday, May 12, 2014

মহর্ষি গালব:------


Cont(last)......


ঋষি বিশ্বামিত্র বললেন --- আমার প্রথম দাবী --- পরম বেদবিৎ আচার্য শাকলের সাহচর্য্যে থেকে তুমি বেদমন্ত্রের ক্রমবিভাগ কর। বেদের স্বর ও ছন্দের অনুসরণে মন্ত্র সংহিতা এবং ব্রাহ্মণের একটি ক্রমানুসারিণী রচনা কর ভবিষ্যৎ উত্তরপুরুষদের জন্য। আর রচনা কর এমন একটি ব্যাকরণ যা পূর্ণাঙ্গ দর্শনের মর্যাদা পায়। কেননা পদ ও পদার্থের বোধ ব্যতীত তন্মূলক বৈদিক বাক্যার্থের সম্যক ঞ্জনোপলব্ধি সম্ভবপর হয় না। 


বেদমন্ত্রের আলোক দীপিকা স্বয়ং মহেশ্বরের রচিত। প্রাচীনতম মাহেশ ব্যাকরণ, ইন্দ্র রচিত ঐন্দ্র ব্যাকরণ, ভাণ্ডারীমুনি রচিত ভাণ্ডরীয় ব্যাকরণ, মহর্ষি কাশকৃৎস্ন রচিত কাশকৃৎস্ন ব্যাকরণ প্রভৃতি ব্যাকরণগুলি কালের স্থূল হস্তাবলেপে জীর্ণ এবং বিস্মৃত হতে বসেছে। তুমি সেইগুলিতে সমকালীন শব্দ ও পদ সংযোজিত করে তাকে আরও উজ্জ্বল ও পরিমার্জিত করে তোল।


শিক্ষা ঘ্রাণং তু বেদস্য মুখং ব্যাকরণং স্মৃতম্‌। শিক্ষাশাস্ত্র যদি বেদের প্রাণ হয়, ব্যাকরণ হল তার মুখ। ব্যাকরণের মধ্যে সমুচ্চ দার্শনিক ভাব এমনভাব উপ্ত করে দাও যাতে তা পাঠ ও মনন করলেই লক্ষ্যবস্তু ব্রহ্ম যেন প্রকটিত হয়ে পড়ে। শাস্ত্র এমন হোক যা মানুষের সকল জিঞ্জাসার ইতি ঘটিয়ে তাকে পূর্ণত্বে প্রতিষ্ঠিত করে।


গালব গুরুর দুটি ইচ্ছাই পূর্ণ করলেন। একদিকে তিনি যেমন বেদের ক্রমবিভাগ করে তার স্বর ও ছন্দ বিন্যাস করেছিলেন তেমনি অন্যদিকে ব্যাকরণ রচনা করে তাকে উন্নত করেছিলেন দর্শনের পর্যায়ে। তাঁর রচিত ব্যাকরণ গালব ব্যাকরণ নামে বিখ্যাত। দুঃখের বিষয় বর্তমানে গালব ব্যাকরণ দেখতে পাওয়া যায় না।


একসময় সমগ্র ভারতবর্ষ জুড়ে এই ব্যাকরণের পঠন পাঠন হত এবং পরবর্তীকালে পাণিনি রচিত ব্যাকরণের পূর্ববর্তী সময়ে রচিত সেনশীয় ব্যাকরণ, কাশ্যপি ব্যাকরণ, স্ফোটায়ণ ব্যাকরণ, আপিশন ব্যাকরণ, ব্যাড়িয় ব্যাকরণ, শাকল্য ও শাকটায়ণ ব্যাকরণ প্রভৃতির উপর প্রভাব বিস্তার করেছিল সে বিষয় কোন সন্দেহ নেই।



স্বদেশে ঐতিহ্যের মহান্‌ মহিমালয়ে
করি প্রতিষ্ঠিত, ধন্য করি দিলে জন্মভূমি
শাশ্বত স্বাক্ষরে। সারস্বত সাধনার সিদ্ধমন্ত্রে তব
মূক যাহা হল তা বাঙ্‌ময়।



Sunday, May 11, 2014

মহর্ষি গালব:------


Cont(2).........

দীর্ঘকাল পরে প্রাণাধিক প্রিয় শিষ্যকে প্রত্যাগত দেখেও স্নেহময় ঋষি কোন স্বস্তিবচন উচ্চারণ করলেন না। বরং তিনি বেদনাহত কণ্ঠে বললেন --- গালব তোমার পাতিত্য দোষ ঘটেছে। 
বিভূতির প্রকাশ দেখিয়ে তুমি সাধনার ব্যাভিচার ঘটিয়েছ। বৈদিক ভারতবর্ষের এটি চিরাচরিত বৃত্ত নয়। অত্যন্ত নিম্ন কোটীর যোগীরাই অস্মিতা ও অবস্পন্দনের দোষে আচ্ছন্ন বলেই তাদেরকে ঘিরে অলৌকিক শক্তির প্রকাশ ঘটে যায়। বিভূতি আত্মজ্যোতির অবস্পন্দন বা কুফল মাত্র। 

বৎস, ঞ্জানসিদ্ধিই ঋষিদের আরাধনার বস্তু। যে অমৃতবিদ্যা মানুষের জীবনকে প্রদীপ্ত করে, পরিতৃপ্ত করে এবং প্রসন্ন করে --- সেই বিদ্যাই ঞ্জানসিদ্ধির পথ। তা কোন অলৌকিক শক্তির যাদুক্রীড়া নয়, লোমচমৎকারী ইন্দ্রজাল প্রদর্শন করাও নয়। এই অমৃতবিদ্যা কখনও অনায়াস লভ্য নয়, তারজন্য চাই অবিশ্রান্ত যত্ন, চাই অবিরাম তপস্যা। শ্রম ও তপস্যায় সেই ব্রহ্মবাণী সৃষ্ট হয়। ভক্তি ও ঞ্জানে তাকে প্রাপ্ত হওয়া যায়। সেই সুগভীর সত্য ঋতে আশ্রিত, সত্য তার আবরণ, সত্য তার বিজয়শ্রী, কল্যাণে তা প্রাকৃত, যশে তা পরিবৃত। দিব্যশক্তিকে সংগোপনে অবলীলাক্রমে ধারণ করে আত্মসাৎ করার মধ্যেই কৃতকৃত্যা। যাও অযথা লোক সংগ্রহ বা বৃথা পরিব্রাজন ত্যাগ করে নির্জনে গভীর তপস্যায় নিমগ্ন হও। বেদঞ্জান আহরণ করার তপস্যাতেই জীবনে আসে অভ্যুদয়। আসে উদয়ণ।

নতমস্তকে গুরুর আদেশ শিরোধার্য করে গালব চলে গেলেন তপস্যার জন্য। এক নির্জন গিরিগুহায় ধ্যানাসনে বসলেন তিনি। দিন যায়, বর্ষ যায়, অবিচলিত নিষ্ঠায় ধ্যানমগ্ন রইলেন গালব। বৎসরের পর বৎসর উৎক্রান্ত হয়ে গেল। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষার উপদ্রব, তুষারের প্রবল বিড়ম্বনাও তিনি হাসি মুখে সইতে লাগলেন। 


অবশেষে সেই পরম বাঞ্ছিত দিনটি তাঁর জীবনে দেখা গেল। তিনি দেখলেন --- সমগ্র হিরন্ময় আকাশ, ভর্গজ্যোতির চকিত চমকে ভাস্বর হয়ে উঠলো, তাঁর অন্তরসত্তা ও বহির্সত্তা দ্যুলোক ভূলোক ব্যপ্ত করে প্রকট হয়ে উঠল বেদবাণী ---


"জ্যোতির পুত্র আমরা --- উদ্বোধন আমাদের, অভ্যুদয় আমাদের --- আমাদের জন্যই পরমাস্থিতি আনন্দচকিত ভূমি, বিদ্বেষ এবং দ্রোহ যেন পরাজয় লাভ করে। এই কথা বলেছেন অগ্নি --- যার দিব্যজ্যোতি জীবনকে ভাস্বর করে তোলে। এই কথা বলেছেন সোম --- যার আনন্দপ্রবাহ বিচিত্র এবং মুক্তছন্দ। আমরা পেয়েছি অমৃতলোকের স্বরূপজ্যোতিঃ --- পেয়েছি পরাসংবিদের পরমাদ্যুতি। যাঁর তেজের দিব্যরাগিনীতে দ্যুলোক অনুপ্রাণিত এবং উজ্জীবিত --- সেই আদিত্যের পরম জ্যোতিস্বরূপকে আমরা জেনেছি --- আমরা পেয়েছি আলোর অমৃতভাণ্ডার।

আহারে! এত আলো এত জ্যোতি এত অমৃতের মধুচ্ছন্দরূপ, সে যে প্রতি জীবের চিদ্‌গুহাতেই সংগুপ্ত আছে। জীব! ওঠ, ওঠ, জাগো জাগো, এই পরাকণ্ঠীর জন্য এই দিব্য প্রৈতির জন্যই যে তোমার মনুষ্যদেহে অবতরণ। জীবনটা তো তোমার যঞ্জ ছাড়া কিছু নয়। এই যঞ্জ বসুমান, জীবনের হবি দিয়ে এই যঞ্জকে পূর্ণ কর।

তোমার উর্ধরতি রসান্বিত হোক। যে জীবন উৎসৃজিত, যে জীবন ঊর্ধের অভিসারে আকুল, সেই জীবনেই জেগে উঠে সচ্চিদানন্দের চিদ্‌বিলাস। সংসার অভিযানে ক্লান্ত আমরা। আমাদের চাই এই পরমানন্দের পরিস্ফূরণ। দুঃখের অরণি মন্থন করে আমরা জ্বালাতে চাই ক্রতুময় বহ্নিশিখা। আমাদের জীবনের তপস্যায় জেগে উঠুক আনন্দ সমুদ্রের কল -কল্লোল। জীবনের পরমা হ্রী ও শ্রী এই পথে ওঁ বসুমান ভূয়ামং বসুময়ি ধৈহি।"

ব্যুত্থানের পর গালব দেখলেন ঋষি বিশ্বামিত্র তাঁর সম্মুখে দণ্ডায়মান রয়েছেন। গুরু আনন্দে আত্মহারা। বুকে জড়িয়ে ধরে বারবার আলিঙ্গন করে গালবকে পরিয়ে দিলেন অক্ষমালা। 


গদগদ কণ্ঠে তিনি বললেন --- গালব, আজ থেকে তুমি মন্ত্রদ্রষ্টা ঋষিকুলে স্থান পেলে। তোমার নিকট প্রকটিত বেদমন্ত্র জ্যোতির অক্ষরে লেখা থাকবে মানুষের পরম ঊর্ধায়ণের কথা। আলোর পিপাসা আর তার পরিতৃপ্তি এবং অমৃতের পথে তার উত্তরণের পরমা আশ্বাস বিধৃত হয়ে উঠল এই বাণীতে। দেখ পরমেষ্ঠী গুরুকুল ঋষিকুল বদ্ধ করে তোমাকে প্রণাম জানাচ্ছে। দক্ষিণা দাও বৎস, দক্ষিণা দাও।


মুগ্ধ, আবিষ্ট, পরম পরিতৃপ্ত, আপ্তকাম গালব নিবেদন করলেন --- আদেশয়! যত্তে মনসি বর্ততে। আপনি যা আদেশ করবেন তাই আমি পালন করব। ......



To be continued..........








Friday, May 9, 2014

মহর্ষি গালব:------


মাত্র ৯ বছর বয়সে গালব এসেছিলেন সমিৎপানি হয়ে ঋষি বিশ্বামিত্রের আশ্রমে। বালক সমাবর্তনের শেষে গৃহে প্রত্যাবর্তন করেন নি। কারণ গুরুগৃহে থাকাকালে তাঁর পিতামাতা গত হন। সংসারের সকল বন্ধন ছিন্ন হওয়ায় গুরুগৃহে কাল কেটেছে গালবের। ঋষিও প্রাণ দিয়ে ভালবাসতেন এই শিষ্যকে। সর্ববিদ্যায় পারংগম, সেবা-তৎপর গালবের বিশেষ গুণ। বেদের সমগ্র শাখায় তাঁর অনায়াসে বিচরণ ক্ষমতা। অন্তেবাসী মাত্রেই জানেন গালব অসাধারণ বিচারমল্ল।

কিন্তু তাঁর পাণ্ডিত্য এবং অতুলনীয় বিচার ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে ঋষি বিশ্বামিত্রের কাছে  অভিযোগ আসে --- বিচারকালে গালব বয়োবৃদ্ধ এবং ঞ্জানবৃদ্ধদের সম্মান রাখেন না।


প্রিয় শিষ্যের নামে অভিযোগ শুনে জ্বলন্ত পাবকের মত মৃগচর্মে সমাসীন গায়েত্রীর মন্ত্রদ্রষ্টা ঋষি গুরু বিশ্বামিত্রের  মুখাবয়বে দেখা দিল ভ্রূকুটিরেখা। সমগ্র ব্রহ্মবর্তে তাঁর আসন বিশেষ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত। অসংখ্য  তাপস, ঋষি বালক, ঋত্বিক, অধ্বর্যু তাঁকে ঘিরে রয়েছেন। পবিত্র হোম ধূমে চারিদিক সুরভিত। এহেন শান্ত ও স্নিগ্ধ পরিবেশে ক্ষুব্ধ কণ্ঠে গুরু বলছেন ------  গালব কবে তুমি তর্ক ও জল্প ছেড়ে মৌন অবলম্বন করবে? কবে তুমি মুনি হবে? বৃত্তেন হি ভবত্যার্থো ন ঞ্জানম ন বিদ্যয়া। গালব মনে রেখো পরিশীলিত আর শ্রদ্ধান্বিত জীবনচর্চা দ্বারাই লোকে আর্য হয়। গালবের সতীর্থদের কাছে এ দৃশ্য কল্পনাতীত। বিনীত কণ্ঠে অথচ সপ্রতিভ ভাবে গালব নিবেদন করলেন --- অধুনৈব, অধুনৈব প্রভো! আপনি আশীর্বাদ করলে এখনই পারি।

সেই থেকে গালব হলেন মৌনব্রতী। কখন কুরু, কখন পাঞ্চাল, কখনও বা পুষ্করের গহন অরণ্যে অবধূতের ন্যায় বিচরণ করতে লাগলেন গালব। এইভাবে প্রব্রজ্যা করতে করতে একদিন গালব রাজা অশ্বপাণির অন্তঃপুরে দৈবাৎ প্রবেশ করেন। কোন দিকে দৃক্‌পাত নেই, আত্মানন্দে তিনি বিভোর। প্রতিহারীরা সঙ্গে সঙ্গে এই নির্লজ্জ অবধূতকে বন্দী করে রাজার সম্মুখে উপস্থিত করল।


ক্রুদ্ধ রাজার আদেশে তখনই তাঁর একখানি হাত কেটে ফেলা হল। এতে গালব কোন ভ্রূক্ষেপ করলেন না। মাটিতে ছিন্ন হস্ত পতিত হল। রক্তের ধারা ঝরে পড়ছে। অথচ আহত ব্যক্তি উদাসীন। মুখে কোন ব্যথা বেদনার বিকার নেই। কোন আর্তনাদ নেই। এই অভাবনীয় দৃশ্য দেখে সপারিষদ রাজা স্তম্ভিত। তিনি বুঝলেন যে এই ব্যক্তি নিশ্চয়ই কোন সিদ্ধ তাপস। তাঁরা সবাই পদতলে পড়ে বারংবার ক্ষমা ভিক্ষা করতে লাগলেন। প্রসন্ন হাসিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠল অবধূতের মুখ। তিনি অস্ফুট কণ্ঠে বললেন --- অপিধভৎস্ব। ভীত সন্ত্রস্ত রাজা শশব্যস্তে হাতখানি তুলে নিয়ে যথাস্থানে সংলগ্ন করলেন --- ক্ষত চিহ্ন নিমেষে গেল মিলিয়ে --- হাতটি যথাপূর্বং তথাস্থিতং। গালব তাঁদেরকে আশীর্বাদ করে নিষ্ক্রান্ত হলেন সেখান থেকে।


এইভাবে ঘুরতে ঘুরতে গালব একদিন গভীর রাত্রিতে এক তপোবনের ব্রীহি যবাদির গোলার কাছে গিয়ে সমাধিস্থ হয়ে পড়েন। আশ্রমের ব্রহ্মচারীরা ভাবলেন এই ব্যক্তি নিশ্চয়ই তস্কর। তারা লগুড় হস্তে গালবকে প্রহার করতে উদ্যত হতেই তিনিও তাদেরকে নিবারণ করার জন্য হাত তুললেন। আশ্চর্যের বিষয় ধ্যানস্থ যোগী এবং আশ্রম রক্ষকদেরকে সারারাত্রি ঐ অবস্থাতে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। প্রত্যুষে গালব চলে যাবার পর ঐ নিশ্চল অবস্থা থেকে আশ্রম রক্ষকরা মুক্তি পায়।


জনপদে জনপদে ছড়িয়ে পড়ছে গালবের অত্যাশ্চর্য কাহিনীর কথা। আপামর জনসাধারণ গালবকে দেখলেই শ্রদ্ধায় বিগলিত হয়ে পড়ছে। গালবের কিন্তু কোন দিকে লক্ষ্য নেই। অর্ন্তলক্ষ্য বহিঃদৃষ্টি, সর্বত্র সমদর্শন সদানন্দময় গালব এগিয়ে চলেছেন গুরু দর্শনের তীব্র আকাঙ্খা বুকে নিয়ে। পথে আবার এক বিভ্রাট দেখা দিল।


জঙ্গল থেকে কাঠ কেটে বয়ে নিয়ে চলেছে কাঠুরিয়াদের দল। তারা গালবকে চেনে না। দলের সর্দার শক্ত সামর্থ গালবকে জোর করে কাষ্ঠভার বহন করতে বাধ্য করল। মহাপুরুষের কিছুতেই আপত্তি নেই --- কোন ক্লেশেই তিনি কাতর নন। কাঠের বিপুল বোঝা মাথায় নিয়ে তিনি হাঁটতে লাগলেন কাঠুরিয়াদের সঙ্গে। দলনেতা মহাখুশী। দুর্বিপাক দেখা দিল একটু পরেই। গন্তব্যস্থলে পৌঁছে কাঠুরিয়াদের স্তূপীকৃত কাঠের রাশির উপর তিনি বোঝাটি ফেলে দেবার পরেই দেখা গেল আশ্চর্য অগ্নিকাণ্ড। সমস্ত কাঠই ভস্মীভূত হয়ে গেল।


ঘটনাটি ঘটল গুরুর আশ্রম থেকে নাতিদূরস্থ অরণ্যের এক উপান্তে। কাজেই সেসব কথা ঋষি বিশ্বামিত্রের কর্ণগোচর হতে বিলম্ব হল না। গালব আশ্রমে পৌঁছে গুরুর চরণে ভূলুণ্ঠিত হলেন। কিন্তু গুরু প্রণাম গ্রহণ করলেন না। ......



To be continued ...........