Monday, May 12, 2014

মহর্ষি গালব:------


Cont(last)......


ঋষি বিশ্বামিত্র বললেন --- আমার প্রথম দাবী --- পরম বেদবিৎ আচার্য শাকলের সাহচর্য্যে থেকে তুমি বেদমন্ত্রের ক্রমবিভাগ কর। বেদের স্বর ও ছন্দের অনুসরণে মন্ত্র সংহিতা এবং ব্রাহ্মণের একটি ক্রমানুসারিণী রচনা কর ভবিষ্যৎ উত্তরপুরুষদের জন্য। আর রচনা কর এমন একটি ব্যাকরণ যা পূর্ণাঙ্গ দর্শনের মর্যাদা পায়। কেননা পদ ও পদার্থের বোধ ব্যতীত তন্মূলক বৈদিক বাক্যার্থের সম্যক ঞ্জনোপলব্ধি সম্ভবপর হয় না। 


বেদমন্ত্রের আলোক দীপিকা স্বয়ং মহেশ্বরের রচিত। প্রাচীনতম মাহেশ ব্যাকরণ, ইন্দ্র রচিত ঐন্দ্র ব্যাকরণ, ভাণ্ডারীমুনি রচিত ভাণ্ডরীয় ব্যাকরণ, মহর্ষি কাশকৃৎস্ন রচিত কাশকৃৎস্ন ব্যাকরণ প্রভৃতি ব্যাকরণগুলি কালের স্থূল হস্তাবলেপে জীর্ণ এবং বিস্মৃত হতে বসেছে। তুমি সেইগুলিতে সমকালীন শব্দ ও পদ সংযোজিত করে তাকে আরও উজ্জ্বল ও পরিমার্জিত করে তোল।


শিক্ষা ঘ্রাণং তু বেদস্য মুখং ব্যাকরণং স্মৃতম্‌। শিক্ষাশাস্ত্র যদি বেদের প্রাণ হয়, ব্যাকরণ হল তার মুখ। ব্যাকরণের মধ্যে সমুচ্চ দার্শনিক ভাব এমনভাব উপ্ত করে দাও যাতে তা পাঠ ও মনন করলেই লক্ষ্যবস্তু ব্রহ্ম যেন প্রকটিত হয়ে পড়ে। শাস্ত্র এমন হোক যা মানুষের সকল জিঞ্জাসার ইতি ঘটিয়ে তাকে পূর্ণত্বে প্রতিষ্ঠিত করে।


গালব গুরুর দুটি ইচ্ছাই পূর্ণ করলেন। একদিকে তিনি যেমন বেদের ক্রমবিভাগ করে তার স্বর ও ছন্দ বিন্যাস করেছিলেন তেমনি অন্যদিকে ব্যাকরণ রচনা করে তাকে উন্নত করেছিলেন দর্শনের পর্যায়ে। তাঁর রচিত ব্যাকরণ গালব ব্যাকরণ নামে বিখ্যাত। দুঃখের বিষয় বর্তমানে গালব ব্যাকরণ দেখতে পাওয়া যায় না।


একসময় সমগ্র ভারতবর্ষ জুড়ে এই ব্যাকরণের পঠন পাঠন হত এবং পরবর্তীকালে পাণিনি রচিত ব্যাকরণের পূর্ববর্তী সময়ে রচিত সেনশীয় ব্যাকরণ, কাশ্যপি ব্যাকরণ, স্ফোটায়ণ ব্যাকরণ, আপিশন ব্যাকরণ, ব্যাড়িয় ব্যাকরণ, শাকল্য ও শাকটায়ণ ব্যাকরণ প্রভৃতির উপর প্রভাব বিস্তার করেছিল সে বিষয় কোন সন্দেহ নেই।



স্বদেশে ঐতিহ্যের মহান্‌ মহিমালয়ে
করি প্রতিষ্ঠিত, ধন্য করি দিলে জন্মভূমি
শাশ্বত স্বাক্ষরে। সারস্বত সাধনার সিদ্ধমন্ত্রে তব
মূক যাহা হল তা বাঙ্‌ময়।



No comments:

Post a Comment