Monday, September 7, 2015

"ভস্মারতি" ---


"......... মন্দিরে যখন পৌঁছালাম, তখন প্রাত্যহিক সন্ধ্যারতি শুরু হয়ে গেছে। নাঙ্গা মহাত্মার সঙ্গে সকলেই হাতজোড় করে দাঁড়িয়ে আছেন। আরতির শেষে নাঙ্গা বাবাকে সঙ্গে নিয়ে বাসায় এলাম। এসেই রঞ্জন এবং বাসবানন্দজী হৈ হৈ করে বলে উঠলেন --- আমরা ত সব এক সঙ্গেই আছি, আপনাদের পঞ্চক্রোশী পরিক্রমার বিবরণ যে কোন সময় শুনে নিতে পারব, আপনারা নিরাপদে ফিরে এসেছেন এতেই আপাততঃ নিশ্চিন্ত হয়েছি। বাব্‌বা! সারাদিন আমাদের কি দুশ্চিন্তাতেই না কেটেছে! স্বয়ং পুরোহিতজীও ঐ দুর্গম জঙ্গলের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করছিলেন। যাই হোক, এ দিকে একটা মজার সংবাদ শুনুন ---

আজ রাত্রি সাড়ে ৩টের সময় শূলপাণিশ্বরের ভস্মারতি হবে। আপনারা পরিক্রমা করে একেবারে সন্ধ্যার মুখে ফিরে এলেন, তাই পুরোহিতজী আমাদেরকে জানাবার সুযোগ পাননি। এ জিনিষ নাকি শিবময় ভারতবর্ষের আর কোন মন্দিরে হয় না। এখানে একজন অঘোরী শিবসাধক থাকেন। তিনি প্রতি সোমবার শেষ রাত্রে ভস্ম নিয়ে পৌছান। কোন সন্ন্যাসীর দেহান্ত হলে অগ্নিতে তাঁর মৃতদেহ সৎকারকালে সর্বাঙ্গ ভস্মীভূত হয়ে গেলে, তাঁর ব্রহ্মতালু যখন ফেটে যায়, সেই ভস্মীভূত ব্রহ্ম তালু সংগ্রহ করে। সেই ভস্ম দিয়ে শূলপাণীশ্বরের আরতি হয়। ঐ আরতি দর্শনের অধিকার কোন স্ত্রীলোক বা গৃহীর নেই। শুধু পরিক্রমাবাসী এবং সন্ন্যাসীদের তা দর্শনের অধিকার আছে।

আমি বললাম --- শুধু এই মন্দিরেই ভস্মারতি হয়, ভারতের আর কোন মন্দিরে হয় না, একথা  মানতে পারলাম না। উজ্জয়িনীর মহাকাল মন্দিরে সপ্তাহে শুধু একদিন মাত্র নয়, প্রতিদিনই সেখানে রাত্রি ৩ টের সময় ভস্মারতি শুরু হয়। মহাকাল মন্দিরে একজন অঘোরপন্থী সাধক আছেন তিনি সারা সপ্তাহ ধরে ভস্মারতির ভস্ম সংগ্রহ করে থাকেন, এক বিশেষ নিয়মে। সেই আরতি দর্শনকালে মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশাধিকার নেই। তবে পুরুষ গৃহীরা তা দর্শন করতে পারে। অবগাহন স্নান কিংবা সেখান কার কোটিতীর্থের জল মাথায় ছিটিয়ে আরতি দেখার নিয়ম। কোটিতীর্থের মধ্যে ৫০ ফুট বা ১০০ ফূট দীর্ঘ এক সুবিশাল ত্রিশূল প্রোথিত আছে।

তোমার কথা সম্পূর্ণ সত্য। তবে এই মন্দিরে আরতিকালে মহর্ষি জৈগীষব্য কৃত একটি স্তোত্র এবং সামবেদের একটি মন্ত্র পাঠ হয় বিশুদ্ধ সুর ও স্বর সংযোগে সে জিনিষ মহাকালেশ্বর মন্দিরেও হয় না। এখানকার পুরোহিত মশাইকে জিঞ্জাসা করলেই জানতে পারবেন, ভস্মারতির জন্য প্রতি সোমবার তাঁকে সারাদিন রাত নিরম্বু উপবাসে থাকতে হয়। মহাকাল মন্দিরের পুরোহিতরা সন্ধ্যা থেকে উপবাসী থাকলেও দিনের বেলা নিরম্বু উপবাসে থাকেন না।"



www.facebook.com/pages/tapobhuminarmada/454528151310191

www.twitter.com/tapobhumi30

www.anandatapobhuminarmada.blogspot.com (Hindi)

No comments:

Post a Comment