Friday, July 10, 2015

"পিতামাতাই প্রকৃত সদ্‌গুরু" ------


"মন্ত্রদাতা ঞ্জানদাতা, তাঁরে বলি গুরু,

সদ্‌গুরু সেই যাঁহা হতে, ব্রহ্মদর্শন শুরু।
স্থিতি ভেদে সংঞ্জা ভেদে, সুকৃতিতে মেলে
মহাগুরু মাতাপিতার, জন্ম হতেই কোলে।।"

বেদ উপনিষদ থেকে আরম্ভ করে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ঋষি মুনি মহাযোগীদের মতে ---


"ওঁ " --- ব্রহ্মমন্ত্র, মন্ত্ররাজ। ব্রহ্মসাধনের একাধারে সাধ্য ও সাধনতত্ত্ব "ওঁ " --- ওমিতি ব্রবীমি তৎ। অ উ ম এর সমবায়ে "ওঁ"। "অ" = ব্রহ্মা অর্থাৎ সৃষ্টিতত্ত্ব, "উ" = বিষ্ণু অর্থাৎ স্থিতিতত্ত্ব বা পালনী শক্তি এবং "ম" = মহেশ্বর অর্থাৎ লয় বা পর্যাবসানের প্রতীক। "ঁ " (পরপ্রণব) সূচিত করে ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বরেরও অতীত পরমতত্ত্ব মহাউদগীথ, পরম জ্যোতি, আনন্দ, রস ও অমৃতস্বরূপ পরমব্রহ্ম।


"ঐং" --- এই মন্ত্র পূর্ণ ব্রহ্মবিদ্যা স্বরূপা বাগেশ্বরী বা সরস্বতীর বীজ। সরস্বত্যর্থ "ঐঁ" শব্দোবিন্দু দুঃখহরার্থকঃ। "ঐ" = সরস্বতী,  "ঁ" = দুঃখহরণ। সরস্বতী শব্দটিকে বিশ্লেষণ করলে দাঁড়ায় --- স,  রসবতী, স + রস + বতুপ, স্ত্রীলিঙ্গে ঈপ্‌ অর্থাৎ স, রসবতী রসস্বরূপ পরমব্রহ্ম। ব্রহ্মবিদ্‌বরিষ্ঠ ঋষিগণ মন্ত্রোদ্ধার করে আদি গুরুর বীজ হিসাবে ঐং কে প্রত্যক্ষ করেছেন। গুরু ঞ্জানদাতা, মুক্তিদাতা, স্বয়মেব ব্রহ্ম। "ঐং" পিতার বীজমন্ত্র হিসাবে নির্দিষ্ট হওয়ায় অর্থ দাঁড়াল --- ঞ্জানদাতা, মুক্তিদাতা, পরমব্রহ্মের  সচল বিগ্রহ  পিতৃদেব আমাদের সর্ববিধ দুঃখ হতে পরিত্রাণ করেন।


"হ্রীঁ " --- ব্রহ্মস্বরূপিণী "হ্রীঁ" বীজ একাধারে মায়া ও ভুবনেশ্বরী  বীজ। স্নেহময়ী মায়ের মধ্যে যাঁর পূর্ণ  প্রকাশ। "হ" = শিব। "র্‌" = প্রকৃতি। "ঈ" = মহামায়া, জগজ্জননী।  "ঁ " = দুঃখহরণ। অর্থাৎ মহাদেবের মহাকল্যাণময়ী শক্তি মহানাদময়ী  জগজ্জননীর ছায়া মা আমাদের দুঃখ হরণ করেন।


মাতাপিতার বীজমন্ত্র  "ওঁ  ঐঁ  হ্রীঁ " এই মহাবীজের মধ্যে শিবশক্তির সামরস্য ঘটছে।


"পরমদুর্লভং বীজং ভজতাং কামদো মণিঃ।" ----- এই বীজ পরম  দুর্লভ  বস্তু, কামদমণির  কাছে  যদৃচ্ছা  প্রার্থনা করলে যেমন সর্বাভীষ্ট সিদ্ধ হয়, সেইজন্য কামদমণি ঞ্জানে এই বীজের ভজনা করা উচিত।।


No comments:

Post a Comment